রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

টীকাঃ ভোক্তাবাদ, পরিবেশবাদ, ভোক্তাই রাজা

ভোক্তাবাদঃ যে সংগঠিত আন্দোলনের ফলে সরকার ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষার্থে বিক্রেতাদের জন্য বিভিন্ন আইন করেন এবং ভোক্তাদের অধিকারকে স্বীকৃতি দেন তাকে ভোক্তাবাদ বলে।
উইলিয়াম জে. স্ট্যান্টনের মতে, "বিনিময় সম্পর্কের ফলে ভোক্তা অসন্তুষ্টির প্রতি কোন ব্যক্তির কার্য প্রতিক্রিয়াকে ভোক্তাবাদ বলে।
Bovee এবং Thill বলেন, "ক্রেতাদের নিরাপত্তা ও অধিকার সংরক্ষণের জন্য সংগঠিত সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক আন্দোলনকে ভোক্তাবাদ বলে।"
Steven J. Skinner বলেন, "Consumerism consists of all the activities undertaken by independent individuals, groups and organizations to protect their rights as consumers."
সুতরাং বলা যায় যে, নাগরিক, সরকারি সংস্থা, ব্যক্তিগত ভোক্তা, দল বা সংগঠন কর্তৃক ভোক্তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য গৃহীত কার্যক্রম বা আন্দোলনকে ভোক্তাবাদ বলে।
পরিবেশবাদঃ  পরিবেশবাদ হচ্ছে এমন ধরনের আন্দোলন যার সাহায্যে সমাজের মানুষকে পরিবেশ দূষণ থেকে মুক্ত রাখার চেষ্টা করা হয়।
ফিলিপ কটলার এবং গ্যারী আর্মস্ট্রং বলেন, "মানুষের বাসযোগ্য পৃথিবীর পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য সচেতন নাগরিক, জনগণ, ব্যবসায়িক ও সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের সঙ্গগঠিত আন্দোলনকে পরিবেশবাদ বলে।"
 Cunningham এবং Saigo বলেন, "পরিবেশবাদ হচ্ছে পরিবেশ দূষণ ও সম্পদ সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য সক্রিয় অংশগ্রহণ।"
সুতরাং বলা যায়, পরিবেশ বাদ হচ্ছে একটি আন্দোলন যার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন।

ভোক্তাই রাজাঃ- বর্তমানে ভোক্তাদের রুচি, পছন্দ, চাহিদা, ক্রয় ক্ষমতা প্রভৃতি বিষয় বিবেচনা করে পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ করা হয় এবং একই সাথে ভোক্তাদের সন্তুষ্টি বিধানের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয়। বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে মনে করা হয় যে, ভোক্তাদের সন্তুষ্ট না করলে দীর্ঘদিন ব্যবসায় টিকে থাকা যাবে না।এজন্য বাজারজাতকরণের সর্বত্র ভোক্তাদের গুরুত্ব প্রদান করা হয়। বাজারজাতকরণে ভোক্তারা যে রাজা এ সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলঃ
১। বাজারজাতকরণ মতবাদঃ আধুনিক বাজারজাতকরণ  মতবাদে মনে করা হয় যে, ভোক্তাদের সন্তুষ্ট করতে না পারলে প্রতিষ্ঠানের অস্তিস্ব বিপন্ন হবে। অর্থাৎ ভোক্তারাই এখানে কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করে।
২। বাজারজাতকরণ মিশ্রণঃ ভোক্তাদের কথা চিন্তা করেই বাজারজাতকরণ মিশ্রণগুলো ডিজাইন করা হয়। এজন্য ভোক্তাদেরকে বাজারজাতকরণের মিশ্রণের কেন্দ্র বিন্দুতে রাখা হয়।
৩। বাজার বিভক্তিকরণঃ বাজার বিভক্তিকরণে ভোক্তাদের বিভিন্ন দলে বিভক্ত করে তাদের উপযোগি বাজারজাতকরণ মিশ্রণ উন্নয়ন করা হয়। এক্ষেত্রে ভোক্তা ও ভোক্তার সন্তুষ্টি গুরুত্ব পায়।
৪। বাজারজাতকরণ পদ্ধতির লক্ষঃ বাজারজাতকরণ পদ্ধতির চারটি লক্ষ রয়েছে। বাজারজাতকরণ পদ্ধতির চারটি লক্ষের প্রতিটিতেই ভোক্তা গুরুত্ব পেয়েছে।
৫। ভোক্তাবাদঃ ভোক্তাবাদে ভোক্তাদের বিভিন্ন বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া হয়। সেসব অধিকার বাস্তবায়নের মাধ্যমে ভোক্তা সন্তুষ্টি বৃদ্ধির চেষ্টা করা হয়।
৬। প্রাতিষ্ঠানিক দিকঃ ভোক্তারা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত বা প্রতারিত না হয় এজন্য বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। সেসব প্রতিষ্ঠান থেকেও ভোক্তারা সহায়তা পাচ্ছে।
উপরোক্ত আলোচনায় দেখা যাচ্ছে যে, সমস্ত বাজারজাতকরণ কর্মকান্ডের কেন্দ্রে রয়েছে ভোক্তা বা ভোক্তার সন্তুষ্টি। এ কারণে বাজারজাতকরণে ভোক্তাদের রাজা হিসেবে গণ্য করা হয়।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন